আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল,
আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না।
কাজী নজরুল ইসলাম |
কবির লেখা পঙক্তিমালা আজও ভাস্বর। অন্যায়ের প্রতিবাদে ‘মহা-বিদ্রোহী’র কথাগুলো আজও রক্তে ঢেউ তোলে। তাঁর ‘উন্নত শির’ কালে কালে কোটি কোটি জনতার চেতনায় নাড়া দিয়ে যায়। আজ শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পত্রিকায় প্রকাশের ১০১ বছর। ১৯২২ সালের এই দিনে কবিতাটি সাপ্তাহিক ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রথম ছাপা হয়। ছাপার পরপরই পাঠকপ্রিয়তার কারণে ফের ছাপতে হয় সংখ্যাটি। দুই বার মুদ্রণে মোট ২৯ হাজার কপি ছাপা হয়।
মাত্রাবৃত্তে লেখা কবিতাটি সেই একশ এক বছর আগের মতোই আজও তরতাজা। যদিও এটিকে সরাসরি মাত্রাবৃত্ত না বলে আবদুল মান্নান সৈয়দের কথায় বলতে হয় ‘ছয় মাত্রার মুক্তক মাত্রাবৃত্ত’র কবিতাটি অসমপার্বিক, বিস্তর ভগ্নপর্ব, সঙ্গে অতিপর্বের ছড়াছড়ি।
অনেকের মতে, বচনে-চয়নে আর বক্তব্যে অসাধারণ ১৩৯ লাইনের কবিতাটি ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে কাজী নজরুল ইসলাম এক রাতেই লিখেছিলেন।
এই কবিতার ছত্রে ছত্রে পৌরানিক রুপকের ব্যবহার এতোটাই যথার্থ যে, পাঠককে মুগ্ধ করে তোলে। আছে গ্রিক আর ইন্ডিয়ান মিথের মিশ্রণ।
কবিতাটির স্বরূপ বিশ্লেষণে বোঝা যায়, এটি মূলত সাম্যবাদের ওপর রচিত। তাই আজও সাম্যবাদী চেতনায় দুলে ওঠে পঙক্তিমালা—
‘বল বীর–/বল উন্নত মম শির!/শির নেহারি আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!/বল বীর –/বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি/চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি/ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া/খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,/উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!’
কোন মন্তব্য নেই
মন্তব্য করুন Cancel