আজ বিখ্যাত বাঙালি লেখক পূর্ণেন্দু পত্রীর ৯৪তম জন্মদিন। বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, পূর্ণেন্দু পত্রী ছিলেন একজন প্রখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, সাহিত্য গবেষক, কলকাতা গবেষক, চিত্র-পরিচালক ও প্রচ্ছদশিল্পী।
১৯৩১ সালের আজকের দিনে হাওড়ার নাকোলেতে জন্মগ্রহণ করেন পূর্ণেন্দু পত্রী। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখিতে তার আগ্রহ ছিল। তিনি ‘কিশোর’ পত্রিকায় কবিতা লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, রম্যরচনা, অনুবাদ, সমালোচনা, গবেষণা – সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তিনি কলম চালিয়েছেন। ‘পূর্ণেন্দু পত্রী’ ছাড়াও ‘সমুদ্রগুপ্ত’ ছদ্মনামেও তিনি লিখেছেন।
পূর্ণেন্দু পত্রীর উল্লেখযোগ্য কবিতাগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘কিশোরের কবিতা’, ‘স্বপ্নের ঘোড়া’, ‘কালবেলা’, ‘রাত্রি রহস্য’, ‘আমার গান’, ‘সেই সময়’, ‘একদিন’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘কবিতা সমগ্র’ ইত্যাদি। তার বিখ্যাত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে ‘এক আকাশের তারা’, ‘পৃথিবীর পাঁচালী’, ‘তিতির কাঠি’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘সুতীর্থ’, ‘কলকাতা ৭১’, ‘রাজা রামমোহন’, ‘মহাকবি মাইকেল’ ইত্যাদি। তিনি শিশুদের জন্য ‘আলটুং ফালটুং’, ‘ম্যাকের বাবা খ্যাঁক’, ‘ইল্লীবিল্লী’, ‘দুষ্টুর রামায়ণ’, ‘জুনিয়র ব্যোমকেশ’, ‘জাম্বো দি জিনিয়াস’ প্রভৃতি জনপ্রিয় বই লিখেছেন।
পূর্ণেন্দু পত্রী তার সাহিত্যকর্মের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। ১৯৬২ সালে ‘কিশোরের কবিতা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ‘আনন্দ পুরস্কার’ লাভ করেন। ১৯৭২ সালে ‘এক আকাশের তারা’ উপন্যাসের জন্য তিনি ‘সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার’ পান। ১৯৯৪ সালে ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ এবং ১৯৯৬ সালে ‘ভারতীয় জ্ঞানপীঠ পুরস্কার’-এ ভূষিত হন তিনি।
২০২৪ সালের 2 ফেব্রুয়ারী, ৯৪ বছর বয়সে পূর্ণেন্দু পত্রী আমাদের মধ্যে না থাকলেও, তার অসামান্য সাহিত্যকর্ম তাকে অমর করে রেখেছে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তার নাম চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
কোন মন্তব্য নেই
মন্তব্য করুন Cancel